শিশুরা হলো ভবিষ্যতের আলোকবর্তিকা। তাদের সঠিক পথে গড়ে তোলা অভিভাবকদের প্রধান দায়িত্ব। তবে অজান্তেই অনেক সময় অভিভাবকরা এমন কিছু ভুল করে বসেন, যা শিশুর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং তাদের বিপথগামী হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। আসুন জেনে নিই অভিভাবকদের সাধারণ ১০টি ভুল—
১. অতিরিক্ত বকাঝকা বা শারীরিক শাস্তি দেওয়া:
শিশুকে বারবার বকাঝকা বা মারধর করলে তারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। এতে তারা ভুল কাজ লুকাতে শেখে, বরং সঠিক পথে ফিরতে চায় না।
২. শিশুর কথা না শোনা বা অবহেলা করা:
শিশুর অনুভূতি ও চিন্তাভাবনাকে গুরুত্ব না দিলে তারা মনে করে, তাদের মূল্য নেই। এতে তারা বাইরের জগতে স্বীকৃতি খুঁজতে গিয়ে ভুল পথে যেতে পারে।
৩. অতিরিক্ত স্বাধীনতা দেওয়া:
শিশুরা সীমারেখা ছাড়া থাকলে সহজেই খারাপ অভ্যাস বা খারাপ বন্ধুমহলের দিকে ঝুঁকে যায়।
৪. অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ বা দমন করা:
যদি শিশুর প্রতিটি কাজে অযথা নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তবে তাদের ব্যক্তিত্ব দমে যায়। এ কারণে তারা গোপনে বিপথে যেতে পারে।
৫. মানসিক সমর্থনের অভাব:
যখন শিশু দুঃখ বা কষ্টে থাকে, তখন যদি অভিভাবকরা পাশে না দাঁড়ান, তবে তারা বাইরের অস্বাস্থ্যকর সম্পর্ক বা পরিবেশে আশ্রয় নেয়।
৬. অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা:
পড়াশোনা বা ক্যারিয়ার নিয়ে অতি চাপ দিলে শিশু হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং নেতিবাচক পথে হাঁটতে শুরু করে।
৭. ভালো আচরণের প্রশংসা না করা:
শিশুর ভালো কাজগুলোকে স্বীকৃতি না দিলে তারা মনোযোগ কাড়তে নেতিবাচক আচরণে ঝুঁকে যায়।
৮. পারিবারিক কলহ প্রকাশ করা:
বাড়ির ভেতরে কলহ বা অশান্তি শিশুর মনে গভীর প্রভাব ফেলে। এতে তারা বাইরে শান্তি খুঁজতে গিয়ে ভুল বন্ধুমহলে যুক্ত হয়।
৯. শিশুর বন্ধু নির্বাচনে উদাসীনতা:
শিশু কার সঙ্গে মিশছে তা খেয়াল না করলে তারা সহজেই খারাপ সঙ্গের প্রভাবে বিপথে চলে যেতে পারে।
১০. মূল্যবোধ ও অভ্যাস গড়ে না তোলা:
ছোটবেলা থেকেই যদি সঠিক শিক্ষা, নীতি ও মূল্যবোধ শেখানো না হয়, তবে শিশুর জন্য সঠিক-ভুল আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
♥ শেষকথা:
শিশুরা ঠিক যেমনটা শিখে, তেমনভাবেই বড় হয়। তাই অভিভাবকদের সচেতন হওয়া জরুরি—যাতে ভুল আচরণ বা অবহেলা তাদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে। সঠিক যত্ন, স্নেহ ও দিকনির্দেশনাই পারে শিশুকে বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষা করতে।
No comments:
Post a Comment